Author:
Author:
কয়েক বছর আগের কথা, আমি তখন ঢাকায়। হঠাৎ মোবাইলে অপরিচিত নম্বর থেকে একটা ফোন এলো, ধরলাম। ও প্রান্তে সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল কোরের একজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, প্রেষণে তখন কেন্দ্রীয় কারাগারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। আমাদের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি করার ব্যাপারে আলাপে আগ্রহী, আমার সাথে দেখা করতে চায়।
কারাগারের ব্যাপারে অনেকের মত আমারো একটা আগ্রহ আছে। ঢাকা মেডিক্যালে অধ্যয়নকালিন বখশীবাজারের শহীদ ডা. ফজলে রাব্বি হলে থাকতাম, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের খুব কাছেই। আমাদের ছাত্রজীবনের বড় একটা অংশ কেটেছে স্বৈরাচারী এরশাদের শাসনের শাসনামলে। প্রায়ই আমাদের রাজপথের সাথী কেউ না কেউ গ্রেফতার হয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আসতেন। মাঝেমধ্যে মেডিক্যালের ছাত্রদেরও কেউ কেউ গ্রেফতার হতেন। আমাদের তখন দায়িত্ব পড়তো কারাগারের অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাপড়-চোপড় আর কাপড়ের ভাজে লুকিয়ে দিয়াশলাই পৌছে দেওয়া। কারাগারের বাইরের ছোট গেট দিয়ে অফিসে ঢুকতাম। সামনেই আরেকটা গেট ছিল। সেটা দিয়ে বন্দীরা কারাগারের ভেতরে ঢুকতো।
ফোনে বললাম, আমিই আপনার অফিসে আসবো, তবে একটা শর্ত আছে। কী শর্ত? ফোনের অপর প্রান্তে উনি জানতে চাইলেন। বললাম, আমাকে ঢাকার পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারটি ঘুরে দেখাতে হবে। আমি দেখতে চাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে কারাগারে কোথায় রাখা হত? তিনি তাৎক্ষণিকভাবে রাজী হয়ে গেলেন।
নির্দিষ্ট দিনে অনুজসম আজাদকে সাথে নিয়ে বখশীবাজারে কারাগারের অফিসে পৌছালাম। আমি আসব এটা মনে হয় সবখানেই বলা ছিল। গেট থেকে নেমে নিজের পরিচয় দিতেই ভিআইপি অভ্যর্থনা শুরু হল। ভদ্রলোক নিজেই অফিস রুমের বাইরে এসে আমাকে ভেতরে নিয়ে বসালেন। বিভিন্ন ধরণের ফলমুল দিয়ে আপ্যায়ন করলেন। তারপর সদলবলে গাড়িতে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। একের পর এক বন্ধ দরজাগুলো খুলে গেলো, আমরা পুরোনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করলাম।
শুরুতেই গেলাম বঙ্গবন্ধুকে যেখানে বন্দী করে রাখা হত। ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটা পড়ে বঙ্গবন্ধুর কারা জীবনের একটা ছবি মনে মনে এঁকে রেখেছি। বঙ্গবন্ধুকে কারাগারের এক পাশে আলাদা একটা সেলে বন্দী করে রাখা হত। সেখানে স্নান এবং রান্নার জন্য আলাদা জায়গা ছিল। বঙ্গবন্ধু একজোড়া হলুদ পাখি পুষতেন। কারাগারে তাঁর ব্যবহার্য জিনিষগুলো খুব যত্ন করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। কাছ থেকে বুকের মধ্যে কেমন যেন করে ওঠে। বঙ্গবন্ধুর সেলের সামনে এক টুকরো বাগান, অনেকরকমের গাছগাছালিতে ভরা। সেখানে বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লাগানো একটা গাছও আছে। কিছুক্ষণ গাছটাকে ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে থাকি। সাথে ক্যামেরা ছিল, ছবি তোলার অনুমতিও ছিল। সেখান থেকে গেলাম আরেকটা ঘরে, যেখানে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করতেন। সেই ছোট্ট টেবিলটা এখনো আছে। ছোট্ট রাসেল সোনা সেই টেবিলের উপরে উঠে দাঁড়াতেন, সাক্ষাত শেষে যেতে চাইতেন না। শেখ রেহানাও খুব মন খারাপ করতেন। বেগম মুজিব, শেখ হাসিনা ও পরিবারের অন্যান্যরা বঙ্গবন্ধুকে কারাগারে দেখতে আসতেন। আমি দাঁড়িয়ে কল্পনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে দেখার চেষ্টা করি। বাংলাদেশের স্থপতি, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান নেতা, আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তার রাজনৈতিক জীবনে কী কষ্টটাই না করেছেন! বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে জীবন-যৌবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো তার কেটেছে কারান্তরালে। অথচ স্বাধীন দেশের কিছু কুলাঙ্গার আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসকে মুছে ফেলতে চায়, বঙ্গবন্ধুর অবদানকে অস্বীকার করতে চায়। সময়ের পরিক্রমায় যদিও তারা বারবার ব্যর্থ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু আপন মহিমায় পৃথিবীর বুকে আজো সমুজ্জ্বল।
আমার আশির দশকের কথা মনে পড়ে। তখন আমি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে পড়ি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তখন রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর নাম কালেভদ্রে উচ্চারিত হোত। আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনসমূহের বাইরে খুব কম রাজনৈতিক সংগঠনই বঙ্গবন্ধুর পক্ষে কথা বলতেন। বরং সে সময়ে বিএনপি-জামাতের রাজনীতির প্রধান টার্গেটই ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এমন কোন অপপ্রচার নাই, যা বঙ্গবন্ধুর নামে করা হোত না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবেই বিকৃত করেছিল জামাত-বিএনপি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অংশ হিসেবে তারা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে উপস্থাপন করেছে, যা সত্যি নয়। প্রকৃত সত্য হোল, পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দী হবার আগে, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ঘোষণাটি চট্টগ্রামে অবস্থিত তৎকালিন ইপিআরের ট্রান্সমিটারে করে প্রচারের জন্য পাঠানো হয়। ঘোষণাটি ছিল, ‘এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন, আপনাদের সর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরূদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উত্খাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক।’
২৬শে মার্চ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের কয়েক’জন কর্মকর্তা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এম.এ.হান্নান প্রথম শেখ মুজিব এর স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রটি মাইকিং করে প্রচার করেন। পরে ২৭শে মার্চ পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বাঙালি অফিসার মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাটি শেখ মুজিবর রহমানে পক্ষে পুনরায় পাঠ করেন। ইংরেজিতে পঠিত ঘোষণাটির বাংলা অনুবাদ নিম্নরূপ:
‘মেজর জিয়া, বাংলাদেশ লিবারেশন আর্মির প্রাদেশিক কমাণ্ডার-ইন-চিফ, শেখ মুজিবর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি। আমি আরো ঘোষণা করছি যে, আমরা শেখ মুজিবর রহমানের অধীনে একটি সার্বভৌম ও আইনসিদ্ধ সরকার গঠন করেছি যা আইন ও সংবিধান অনুযায়ী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের সরকার জোট-নিরপেক্ষ নীতি মেনে চলতে বদ্ধপরিকর। এ রাষ্ট্র সকল জাতির সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং বিশ্বশান্তির জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। আমি সকল দেশের সরকারকে তাদের নিজ নিজ দেশে বাংলাদেশের নৃশংস গণহত্যার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। শেখ মুজিবর রহমানের সরকার একটি সার্বভৌম ও আইনসম্মত সরকার এৰং বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাবার দাবিদার।’
বিএনপি-জামাতের স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে সৃষ্ঠ বিতর্কের প্রেক্ষিতে আমার মনে হোত, দপ্তরী ছুটির ঘন্টা বাজালেও সে তো স্কুল ছুটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবার কেউ নয়। এটা তো স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরই এখতিয়ার। জিয়াউর রহমান ছিলেন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে রেডিওতে স্বাধীণতার ঘোষণার একজন পাঠক মাত্র। অথচ তাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ইতিহাস বিকৃতির কত অপচেষ্টাই না করেছে। শুধু মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিই নয়, স্বাধীন বাংলাদেশে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকার-আলবদরদের মন্ত্রী বানিয়ে, তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে চরম অসম্মান করেছেন বাংলাদেশের প্রথম সামরিক স্বৈরশাসক মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বঙ্গবন্ধুর মত ক্ষণজন্মা, কালজয়ী রাজনীতিবিদের রাজনৈতিক চরিত্র হণনের জন্যও তাদের অপচেষ্টার কোন কমতি ছিল না। এসব অপকর্মের ফলে তারা সাময়িক সাফল্য পেয়েছিল, মধ্য সত্তর থেকে মধ্য নব্বই দশক পর্যন্ত একটা প্রজন্ম বিভ্রান্তির মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছিল। তবে দিনের শেষে অপপ্রচারের সব মেঘ সরে গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সূর্যের মত আপন আলোয় আজো জ্বলজ্বল করছেন। স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে আজ আর নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করা যাবে না।
সেখান থেকে আমরা গেলাম জাতীয় চার নেতা শ্রদ্ধেয় সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ,ক্যাপ্টেন মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে যেখানে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। চত্বরে ঢুকতেই জাতীয় চার নেতার আবক্ষ মূর্তি চোখে পড়ে। প্রতি বছর ৩ নভেম্বর সেখানে চার নেতার পরিবারের সদস্যসহ অন্যান্যরা গিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করে। তাদের সেলের লোহার গেটে এখনো গুলির দাগ লেগে আছে। প্রতিটি প্রকোষ্ঠে তাঁদের ব্যবহৃত খাট, টেবিলসহ সকল জিনিষপত্র সযত্নে সংরক্ষণ করা হয়েছে। কারাগারে যেখানে বন্দীর নিরাপত্তা নিশ্চিত হবার কথা, সেখানে ভীরু-কাপুরুষের দল রাতের অন্ধকারে কারাগারে প্রবেশ করে ৭৫ এর ৩ নভেম্বর আমাদের জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে। মনের অজান্তেই সেই রাতের ঘাতকদের প্রতি একরাশ ঘৃণা ও ক্ষোভ জেগে ওঠে।
ঊর্ধ্বতন কারা কর্মকর্তাদের সাথে পুরো কারাগারটাই আমরা ঘুরে দেখলাম। কোথায় রান্না হত, কোথায় ফাইল বসত, আমদানী রুম, হাসপাতাল, মহিলা ওয়ার্ড, একে একে সবজায়গায় গেলাম। সাথে সবকিছুর বিস্তারিত বর্ণনা। ভেতরের বেকারিটা এখনো চলমান, নানা রকমের বিস্কুট বানানো হচ্ছে। আমাদের জন্য কয়েক প্যাকেট বিস্কুট উপহার হিসেবে দেওয়া হল। কারাগারের ভেতরে কম্বল তৈরির ফ্যাক্টরি ছিল।
কারাগারের এক প্রান্তে ফাঁসির আসামীদের জন্য কড়া নিরাপত্তাবেস্টিত সারিবদ্ধ কনডেম সেল। একজন ফাঁসির আসামী দিন-রাতের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে শুধুমাত্র চৌবাচ্চার পানিতে গোসলের লক্ষ্যে আধাঘন্টার মত কনডেম সেলের বাইরে থাকে। বাকিটা সময় খুবই স্বল্পপরিসর ওই কনডেম সেলে। ফাঁসির রায় ঘোষণা থেকে কার্যকর হবার মধ্যবর্তী সময়ে ওই কনডেম সেলে থাকলে যে কোন কয়েদিরই আধেক মৃত হয়ে যাবার কথা। আট নম্বর কনডেম সেলের সামনে এসে জানলাম, এই সেলে যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামী থাকতো। এর পাশেই ফাঁসির মঞ্চ, যেখানে নিজামীসহ অনেক যুদ্ধাপরাধীকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল। আমাকে যিনি আমন্ত্রন জানিয়েছেন, তিনি নিজে নিজামীর ফাঁসির সময় মঞ্চের কাছেই উপস্থিত ছিলেন। তিনি একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিলেন। বললেন, যে মূহুর্তে পায়ের নীচের পাটাতন সরে যায়, তখনি ফাঁসিতে ঝোলা আসামীর শরীর নীচে পড়ে চোখের আড়ালে চলে যায়। আমাদের অনেকের ধারণা লাশটা হয়তো তখন চোখের সামনে দড়িতে ঝুলতে থাকে। আসলে তা নয়, শরীরটা নীচে ঝুলতে থাকে। সেখান থেকে পরে লাশ বের করা হয়।
কয়েক বছর আগে কয়েকদিনের জন্য এই পুরোনো কারাগারটা সাধারণ মানুষের পরিদর্শনের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। পরে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটির দায়িত্ব হল ভবিষ্যতে এই কারাগারটি নিয়ে কী করা যায় সে ব্যাপারে সুপারিশ করা। কারাগারে বঙ্গবন্ধুর উপর একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীও হয়েছিল। ছবিগুলো তখনো দেয়ালে শোভা পাচ্ছিল। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের অনেক দূর্লভ ছবিই সেখানে শোভা পাচ্ছিল। সংগ্রামের দীর্ঘ, বন্ধুর পথ পেরিয়েই শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধ হয়েছিলেন, বাঙালি জাতির জনক হয়েছিলেন, বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ছবিগুলো যেন সেই ইতিহাসেরই কথা বলছিল।
কারাগার পরিদর্শন শেষে বেরোনোর পথে ভাবছিলাম, কী অদ্ভূত আমাদের রাজনীতির গতিপথ। যে কারাগারে পাকিস্তানী শোষক গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধু মুজিবকে বছরের পর বছর বন্দী করে রেখেছে, সেই পাকিস্তানের দালাল-যুদ্ধাপরাধীদের পালের গোদাদের ফাঁসি হয়েছে। পাকিস্তানীদের সাথে ষড়যন্ত্র করে এদেশের ঘাতক- কুলাঙ্গার পাকি ছানারা পচাত্তরের পনেরোই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যা করেছে ঠিকই, কিন্তু তাঁর আদর্শকে নিশ্চিহ্ন করতে পারেনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তাঁর কীর্তির মধ্য দিয়েই অমরত্ব লাভ করেছেন। পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামটা যতদিন থাকবে, ততদিন তার সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে থাকবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নাম। জন্মশতবার্ষিকীতে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, মহান নেতা, বাঙালির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।